হরমোন হলো আমাদের শরীরের বিশেষ রাসায়নিক সংবাদদাতা। এরা এন্ড্রোক্ৰীন গ্ল্যান্ডের মাধ্যমে তৈরী হয় এবং রক্তনালীর মাধ্যমে সমস্ত অঙ্গ এবং টিস্যুতে যায় তাদেরকে কি করতে হবে জানাতে। হরমোনের ভারসাম্যের ওপর আমাদের পরিবেশ এবং জীবনশৈলীর একটি বিশাল প্রভাব আছে।
“এন্ডোক্রিন ব্যাহতকারীরা হরমোনের কাজের অনুকরণ করে হরমোনের স্বাভাবিক কাজ পরিবর্তন করে দেয়। এটি করতে গিয়ে, তারা আপনার জনন তন্ত্র, ইমিউন এবং স্নায়বিক সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে” ডাক্তার হাসনা বলেন, যিনি ঢাকাতে নোভা আইভিএফ ফার্টিলিটি ক্লিনিকের একজন ফার্টিলিটি কনসালটেন্ট।
“বিশেষত জেনোইস্ট্রোজেন এক ধরণের এন্ডোক্রিন ব্যাহতকারী যা ইস্ট্রোজেনের অনুকরণ করে। এই জেনোইস্ট্রোজেনগুলি বায়োডিগ্রেডেবল নয় বলে তারা আপনার শরীরের চর্বি কোষে সংরক্ষিত হয়। তারা বিভিন্ন সমস্যার সাথে জড়িত যেমন স্তন, প্রস্টেট এবং টেস্টিকুলার ক্যান্সার, দ্রুত শুরু হওয়া বয়ঃসন্ধি, স্থুলতা, বন্ধ্যাত্ব, মিসক্যারেজ এবং ডায়াবেটিস” তিনি আরও জানান।
প্রজনন বয়সের মহিলাদের মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) সবচেয়ে সাধারণ হরমোনের সমস্যা। বিভিন্ন কারণ যেমন জিন, অস্বাস্থ্যকর খাবার অভ্যাস, ব্যায়ামের অভাব যেন দূষণ পিসিওএস হবার পেছনে কারণ। এই মহিলাদের সমস্যা মেটাবার জন্য জীবনশৈলীর পরিবর্তন একটি প্রধান অবলম্বন এবং প্রায়শই তারা গর্ভধারণের জন্য একজন ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিয়ে থাকেন।
খুব বেশি চাপ, ঘুমের অভাব, অনিয়মিত কাজের সময় হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের শরীর একটি জৈবিক ঘড়ির সাথে অভ্যস্ত এবং তার সঠিক বিশ্রাম এবং যত্ন প্রয়োজন হয়।
কি ভাবে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার চিকিৎসা করা হয়?
কিছু জীবনশৈলীর পরিবর্তন যেমন একটি স্বাস্থ্যকর সুষম খ্যাদ্যাভ্যাস, আঞ্চলিক ভাবে উৎপন্ন জৈবিক খাদ্য খাওয়া, ফাস্ট ফুড এবং প্যাকেজ ফুড খাওয়া এড়ানো, যেখানে সম্ভব প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো, রাসায়নিক যুক্ত ক্রিম এবং কসমেটিক ব্যবহার এড়ানো হরমোনের ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও, যথেষ্ট এবং নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর এবং সময়মত ঘুমোনোর অভ্যাস, চাপ সামলানোর পরিকল্পনাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।